Posts

Showing posts from December, 2014

অনুগল্প : খরগোশ

© তারিক ওয়ালি মানুষ খারাপ হতে পারে কিন্তু প্রাণী তো কখনো খারাপ হতে পারে না। ছাদে মোটামুটি বড় সাইজের 5 তলা বিশিষ্ট একটা খাঁচা রয়েছে। একসময় আমরা 25 জোড়া কোয়েল পালতাম ওটায়। এখন আর কোয়েল নেই। শূন্য খাঁচা শূন্য পড়ে ছিলো দীর্ঘদিন। বছর খানেক আগে একটা খরগোশের আমদানী হয়। খরগোশের আবাস এখন ওই খাঁচা। খরগোশটা কীভাবে এলো, তার একটা মোটামুটি ইতিহাস রয়েছে। এটাকে কেনা হয়নি। উইল করে যায়নি মালকিন। একপ্রকার দান করে গেছে বলা চলে। চরম ঘৃণিত সেই দান। তার ইতিহাস খুব একটা সু্ন্দর না। এর পিছনে রয়েছে একটা জীবনের গল্প। ব্যর্থতার গল্প। ঝং ধরা জীর্ণ-শীর্ণ খাঁচার মতই করুণ খরগোশের জীবনকাহীনি। একসময় যে খরগোশটা ছিলো রাজার হালতে, সে এখন পথের ভিখিরি। সারাদিন অপেক্ষা করে খাওয়ার জন্য। হয়তো পায় দু-একটা গাছের পাতা, গাজর আর শশা। কোনোদিন না খেয়ে থাকে। বিশ্বাস করেন, কাছে গেলেই খাবার পাবার আশায় অস্থির হয়ে উঠে ওটা। হাত চাটতে হাতে। তখন মন খারাপ হয় প্রচন্ড। কি দোষ এই অবলা প্রাণীর? মানুষ মানুষের সাথে প্রতারণা করে। তার ফল কেন ভোগ করবে এই নীরিহ একটা খরগোশ? তার উত্তর আমার জানা নাই। আচ্ছা? খরগোশের কি ভাগ্য থাকে? তা

স্বাধীনতা

© তারিক ওয়ালি  ছেলেটাকে মারতে মারতে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে গেলো লোকটা। ছেলেটার হাতের বস্তা পড়ে গেলো রাস্তায়। হতবাক হয়ে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে রইলো। মার খেতে খেতে ঘটনা বুঝার চেষ্টা করলো। কি অপরাধে তাকে মারা হচ্ছে? না, কিছ্ইু বুঝতে পারলো না। কিছুক্ষণ পর মার খেয়ে চিৎকার করতে লাগলো অসহায় ছেলেটা। দু মিনিটেই আশেপাশে অনেক মানুষ জড়ো হয়ে গেলো।  দাঁড়িয়ে দেখতে লাগলো তামাশা। যেনো এরচে বড় তামাশার বস্তু পৃথিবীতে নাই। কেউ এগিয়ে এলো না ছেলেটাকে মারের হাত থেকে রক্ষা করতে। হয়তো ৯০ শতাংশ লোকই জানে না কেনো মার খাচ্ছে ছেলেটা। কী অপরাধ তার! তামাশা দেখা বাঙালিদের চিরায়ত বৈশিষ্ট্য। শত ব্যস্ততার মাঝেও বিনোদন খুঁজে পায় তারা। হোক সেটা কাউকে মারার দৃশ্য কিংবা হকারের গালভর্তি চাপাবাজি। ছেলেটার কতদিন গোসল হয়নি কে জানে! হাতে-পায়ে ময়লার পুরো আস্তরণ। মাথার চুল লালচে-বাদামী রং ধারণ করেছে। হাফপ্যান্ট পরা কাগজকুড়ানি ছেলেটার জন্য বুকটা কেমন  মোচড় দিয়ে উঠলো রশিদের। পুরো ব্যাপারটা দেখলো রশিদ। মন খারাপ হলো প্রচন্ড, কিন্তু কিছুই করতে পারলো না। ইচ্ছা করলেই পারে এগিয়ে গিয়ে ছেলেটাকে মারের হাত থেকে রক্ষা করতে কিংবা বাঁধা দিতে। কিন্তু

সেই ছেলেটি

একটি ছেলে স্বপ্ন দেখে, স্বপ্ন দেখে হাসে। স্বপ্নগুলো জমতে থাকে মনের কোনো গহীণ বাঁকে খুব সকালে শিশির যেমন, জমতে থাকে ঘাসে। সেই ছেলেটি বাস্তবতায় করুণ হাসি হাসে। মন ভেঙে যায় খুব হতাশায় তারপরও সে কিসের আশায় নিজকে ভুলে সুখের নেশায়, মানুষ ভালোবাসে। সেই ছেলেটি একলা ভীষণ, একলা মনেই ভাবে সবকিছু সে ছেড়ে দিয়ে কল্পলোকের স্বপ্ন নিয়ে দূর অজানায় অনেক দূরে, কোথাও চলে যাবে। 09-12-2014